থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয়, থাইরয়েড কমানোর উপায়, থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা
থাইরয়েড হলো একটি গ্রন্থি যা গলার সামনে থাকে। এটির কাজ হচ্ছে খাদ্য থেকে আয়োডিন নিয়ে থায়রয়েড হরমোন উৎপন্ন করে। এটি শরীরের বেশিরভাগ কাজে সহযোগিতা করে থাকে। যেমন- হার্টরেট, সার্কুলেশন, লিভার ফাংশন, ইন্টারনাল ক্লক ও মেটাবলিজম ইত্যাদি।
থাইরয়েড হলে সাধারণত হটাৎ করে দেহের ওজন বৃদ্ধি পায়, শরীরের চামরা খসখসে হয়ে যায়, চেহারা ফুলে উঠে। নিত্যদিনের কাজকর্মে অনিহা চলে আসে। গলার পরের যেই অংশ রয়েছে এটিকে নিরব ঘাতক বলা হয়ে থাকে কারন এটি হওয়ার সময় জানা জায় না। সময়মত চিকিৎসা না পাওয়ার কারনে পরিস্থিতি বিপদজনক হয়ে উঠে।
প্রিয় পাঠক, নতুন একটি আর্টিকেলে আপনাদেরকে স্বাগতম, আশা করি সবাই ভালোই আছেন। আজকের আর্টিকেল এর আলোচনার বিষয় থাইরয়েড কি, কেন হয়, কি খেলে ভালো হয়, থাইরয়েড কমানোর উপায় ইত্যাদি বিষয়।
আরও পড়ুন:
খুশখুশে কাশির সিরাপ ও কাশি দূর করার উপায়
কলমি শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
পুরুষের জন্য মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা
শীতে বাচ্চাদের জন্য কোন ক্রিম ভালো
থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয়, থাইরয়েড কমানোর উপায়, থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা |
থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয়
হরমোন জনিত ঘাটতির জন্য থাইরয়েড হয়ে থাকে। ডাক্তারি পরামর্শ নিয়ে এমন কিছু খাদ্য রয়েছে যা নিয়মিত খেতে থাকতে আস্তে আস্তে থাইরয়েড ভালো হয়। অর্থাৎ থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি পূরণ করতে পারে নিচের খাবারগুলো। আজ এমন কিছু খাদ্যের নাম ও উপকার সম্পর্কে আলোচনা করবো যেগুলো থাইরয়েড এর জন্য বেশ উপকারি।
নারকেল তেল: এটি থাইরয়েড হরমোনকে উদ্দিপ্ত করে গ্রন্থির কাজকর্ম ভালো রাখতে সহায়তা করে। এর জন্য এর তেল থেকে তরকারি রান্না করে খেতে হবে এছাড়াও চকলেট বা স্মুদিতে ব্যবহার করেও খেতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন যেন প্রতিদিন তিন চামচের বেশি নারকেল তেল না খান। ঠান্ডা নারিকেল তেল শরীরে লাগাতে পারেন। এতে শরীরের ওজন কমবে এবং বিপাকীয় ক্রিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
দই: ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ হয়ে থাকে দই। এই কারনে থাইরয়েড সমস্যার জন্য দই খাওয়া উচিৎ। হাসিহিমোস নামে একটি রোগ আছে যেটি ভিটামিন ডি এর অভাবে হয়ে থাকে এটিও হাইপোথাইরয়েডিজমের একটি অন্যতম কারন।
মাছ: থাইরয়েড জনিত সমস্যা দূর করতে এবং স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে স্যামন বা স্যালমন মাছ বেশ উপকারি খাবার। এই খাবারে রয়েছে বেশি পরিমানে প্রদাহরোধি উপাদান। স্যামন মাছে রয়েছে ওমেগা ৩ নামক ফ্যাটি এসিড যা থাইরোয়েড রোগের জন্য উপকারি।
বাদামি ভাত: লাল চালের ভাত বা বাদামি ভাত এই রোগের জন্য বেশ উপকারি খাবার। কারন এটিতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট। বাদামি ভাত বা লাল চালের ভাত হজম সমস্যার সমাধানও করে থাকে। থাইরয়েড সমস্যার কারনে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই থাইরয়েড এর ওষুধ খাওয়ার ১ ঘন্টা পূর্বে বাদামি ভাত খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে ডাক্তাররা
ডিম: টাইরোসিন, আয়োডিন ও সেলেনিয়াম এই তিনটি পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে ডিম। আর এই তিনটি পুষ্টির অভাবেও থাইরয়েড হয়ে থাকে। তাই ডিম খেলে থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে করতে সক্ষম হয়।
থাইরয়েড কি খেলে বা কি করলে ভালো হয় তার সম্পর্কে কিছু তথ্য জানলেন চলুন আরও কিছু জেনে নেই।
থাইরয়েড কমানোর উপায়
ডাক্তারদের মতামত অনুসারে হরমোন উৎপাদনের ব্যালেন্স বজায় রাখতে অ্যাপেল সিডার ভিগেনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপকারি উপাদান। বিপাক ক্রিয়ার উন্নতি হয়ে থাকে এই বিগেনার থেকে। এটি শরীরের চর্বি নিয়ন্ত্রন করতে সহায়তা করে এবং দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে পুষ্টি যোগায়।
আদা আমরা প্রায় প্রায় খেয়ে থাকি কিন্তু এই আদায় বিভিন্ন খনিজ যেমন পটাশিয়া, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি থাকায় এটি থাইরয়েড এর জন্য উপকারি। তাই থাইরয়েড সমস্যার জন্য আদা এবং আদার চা খাওয়া অনেক উপকারি।
ভিটামিন বি এর ভূমিকা: থাইরয়েড নিয়ন্ত্রন করবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ভিটামিন বি। ভিটামিন বি হাইপোথাইরয়েডিজমে ভোগছে এমন রোগিদের জন্য বেশ উপকারি। তাই ডিম, দুধ, বাদাম, মাংস ইত্যাদি ভিটামিন বি যুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যুক্ত করবেন এই ভিটামিন বি যুক্ত খাবার।
ভিটামিন ডি এর ভুমিকা: অনেক সময় দেখা যায় যে ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত কারনে এই থাইরয়েডের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই একমাত্র সূয্যের আলোর উৎস ভিটামিন ডি গায়ে লাগাতে পারেন। প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট করে সকালের সূয্য থেকে ভিটামিন ডি নিতে পারেন। এছাড়াও ডিমের কুসুম, স্যামন মাছ, কমলা লেবুর রস, দুধ, ম্যাকারেল ইত্যাদিতে রয়েছে ভিটামিন ডি।
আয়োডিন ও খনিজ সমৃদ্ধ খাবার: আয়োডিন ও খনিজ রয়েছে এমন খাবার থাইরয়েডের জন্য বেশ উপকারি যেমন- দুধ, পনির, দই ও দই জাতিয়া খাবার বেশি করে খেতে হবে। আয়োডিন যুক্ত খাবার যেমন- দুধ, ডিম, সাদা মাছ এছাড়াও রান্নার লবণে আয়োডিন থাকে।
থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা
- কমলা
- লেবুর
- গাজর
- মিষ্টি আলু
- মটরশুটি
- ডিম
- মসুর
- ডাল
- বাদাম
- মাছ
- চর্বিহীন মাংস
- ছোলা
- শাকসবজি, কলমি, পালং শাক, ব্রকলি
- স্বাস্থ্যকর চর্বি: জলপাই তেল, বাদাম, বীজ,
- নাশপাতি
থাইরয়েড এর মাত্রা কত?
থাইরয়েড রোগে যা খাবেন না
- ক্রুসিফেরাস শাকসবজি: যেমন- বাধাকপি, ফুলকপি
- সয়াবিন
- গ্লুটেনযুক্ত খাবার: পাস্তা, কেক, চিপ্স, রুটি, পাউরুটি, সস, বিয়ার
- চিনি
- কৃত্রিম সুইটেনার
- সাধারণ লবণ
- বাজরা ও শিমুল আলু
- প্রক্রিয়াজাত খাবার
আজকের আর্টিকেল থেকে জানতে পারলেন থাইরয়েড কি, কেন হয়, থাইরয়েড হলে কি খেলে ভালো হয়, কি কি খাওয়া যাবেনা ইত্যাদি বিষয়। আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে ভালো গেলেছে। যদিও সংক্ষিপ্ত আকারে তথ্য দেওয়া হয়েছে। আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
দাবিত্যাগ (Disclaimer)
একটি ব্লগ ওয়েবসাইট যেখানে স্বাধারণ স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস, পরামর্শ, ঔষধি গাছ, ভেষজ উদ্ধিদ সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হয়। ইন্টারনেট/ম্যাগাজিন/পত্রিকা/বই ইত্যাদি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আমরা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে থাকি
তবে এটি মনে রাখা জরুরী যে, প্রত্যেকটি ঔষুধ, ও ঔষুধি গাছ সেবনের পূর্বে বিষেশজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ করতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয় বাংলা হেলথ ব্লগ কর্তৃপক্ষ। তাই আমাদের ওয়েবসাইটের সরাসরি পরামর্শ অনুসারে কোনো ঔষুধ বা ঔষুধি গাছ সেবন, লাগানো, ব্যবহার, ইত্যাদি থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দেয়।
তথ্যসুত্র: Tune status, digitaltuch, lybrate, risingbd
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন