কেমন হওয়া উচিত রমজান মাসের খাদ্যাভ্যাস..!! | রোজায় গ্রহণীয় ও বর্জনীয় খাবার

 
 

 

রমজানে স্বাস্থ্যকর খাবার | কেমন হওয়া উচিত রমজান মাসের খাদ্যাভ্যাস..!! | রোজায় গ্রহণীয় ও বর্জনীয় খাবার


বহুল আকাঙ্ক্ষিত রমজান মাস দোর গোড়ায় এসে গেছে। রমজানে আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনের বেশকিছু পরিবর্তন ঘটে। আর সব থেকে বড় পরিবর্তন হয় খাবারের ক্ষেত্রে। রমজান মাসে শরীর সুস্থ রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।

রমজানে স্বাস্থ্যকর খাবার

রোজা রাখা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, রমজানে চাই স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার। আমরা সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারে অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার খাই। এ খাবারগুলো অনেক সময় বাহির থেকে কিনে আনি। যার মান নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।

রমজান মাসে খাবার সাধারণত তিনবার খাওয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সব ধরনের খাবারই নিয়ম মেনে খেতে হবে। যেন পুষ্টিকর খাবারের অভাবে শরীর দুর্বল না হয়।




  • ইফতারিতে কি কি খাবেন ?

একজন রোজাদার ইফতারে কি খাবেন তা নির্ভর করবে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বয়সের উপর। পারত পক্ষে দোকানের তৈরি ইফতারি ও সাহরি না খাওয়াই ভালো।


ইফতারিতে যেসব খাওয়া উচিত

দু-একটা খেজুর বা খুরমা, ঘরের তৈরি বিশুদ্ধ শরবত এবং টাটকা ফল খেলে শরীরের জন্য ভালো। সঙ্গে চাইলে ঘরে তৈরি মুখরোচক খাবার থাকতে পারে।

( ফলে ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়। ফল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং সহজে হজম হয়। )


  • কি খাবেন না ইফতারিতে :

বেশি ভাজি কাবাব ,ভুনা তেহারি ও হালিম। কারন এতে বদহজম হতে পারে।

বাজারে যেসব ইফতার পাওয়া যায় সেসব মুখরোচক খাবার স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে তৈরি করা হয়েছে কিনা তা জানার উপায় নেই । যদি মনে হয় সেসবে ভেজাল তেল, বেসন ও কৃত্রিম রং মেশানো আছে সেগুলো বর্জন করুন।

( যে তেল ভাজা হয় তা একবারের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। এর কারণ হল একই তেল বারবার পোড়ানোর ফলে অনেক রাসায়নিক পদার্থ উৎপন্ন হয়, যেমন পলিনিউক্লিয়ার হাইড্রোকার্বন, যাতে বেনজোপাইরিন নামক ক্যান্সার হতে পারে। )




  • এশা ও তারাবির নামাজের পর রাতের খাবার :

সন্ধ্যা রাতের খাবারে ভাত বা রুটি, প্রচুর সবজি, দু-এক টুকরা মাছ বা মাংস, ডাল, দুধ ও ফল খেতে হবে।


  • কি খাবেন সাহরিতে:

সাহরিতে একটু হালকা খাবারই ভালো। আমাদের প্রায় ১৫ ঘণ্টা না খেয়ে রোজা রাখতে হবে। সাহরির খাবার মুখরোচক, সহজ পাচ্য ও স্বাস্থ্য সম্মত হওয়া প্রয়োজন। প্রচুর আশযুক্ত খাদ্য এবং পানি পান নিশ্চিত করতে হবে।

সাহরির সময় প্রয়োজনাতিরিক্ত খাবার মোটেও ঠিক নয়, কারণ চার-পাঁচ ঘণ্টা পর খাবার পাকস্থলী থেকে অন্ত্রে গিয়ে হজম হয়ে যায়।


  • গরমে পানিশূন্যতা কিভাবে মোকাবেলা করবেন

গ্রীষ্মকালীন রমজানে পরিমাণ মতো বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত । দীর্ঘ সময় অভুক্ত থাকার কারণে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে এবং পানি শূন্যতার কারণে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়। তাই ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে অন্তত দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করবেন।

অনেকে পানির পরিবর্তে গোলাপ জল, বিভিন্ন ধরনের শরবত, ভিটামিন ওয়াটার সহ নানা ধরনের প্রক্রিয়াজাত পানীয় পান করেন।

(এ ব্যাপারে অনেকের অভিমত: রোজাদারদের শুধু বিশুদ্ধ পানি পান করাই ভালো। )

তাদের মতে, কার্বোনেটেড ও সুগার ড্রিংক, চা ও কফি পান করলে শরীর থেকে অধিক পানি বের হয়ে যায়।

  • কফি ও চায়ের মূত্রবর্ধক প্রভাবের কারণে ইফতার ও সাহরিতে চা বা কফি পরিহার করাই ভালো।
  • রোজাদারদের প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া উচিত।
  • অতিরিক্ত লবণ ও লবণাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ এইগুলো পানির পিপাসা বৃদ্ধি করে।
  • শুধু পানি খেয়ে কখনোই রোজা রাখবেন না। এছাড়াও অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। খাবার ভালো করে চিবিয়ে ধীরে ধীরে খান, যা আপনার হজমে সাহায্য করবে।
  • ঘুমানোর আগে এবং সাহরির পরে দাঁত ব্রাশ করতে ভুলবেন না। রোজা রাখা অবস্থায় সকালে ব্যায়াম না করে ইফতারের পর ব্যায়াম করা উচিত।

  • দিনে গরম আবহাওয়ায় ঠাণ্ডা ও ছায়াময় স্থানে থাকা উচিত।

প্রতিটি রোজাদার ব্যাক্তির জন্য ইফতার ও সাহরি সময় অত্যন্ত আনন্দদায়ক। প্রায় সকল মুসলমান বাড়িতেই ইফতার ও সাহরির প্রস্তুতি প্রায় ঘণ্টা খানেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায়। সকলেই নিজেদের সাধ্যমত পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করে। তবে খাবার নির্বাচনে যথেষ্ট সচেতন থাকা জরুরী। "অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুর রহিম" তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের আশেপাশে অনেকেই রোজা রাখার পর ইফতারের সময় একসঙ্গে অনেক খাবার খান, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অনেকে আবার বিভিন্ন ধরনের ভাজা বা তৈলাক্ত খাবারও খেয়ে থাকে। যার ফলে বুকে, পেটে ব্যাথা থেকে শুরু করে নানা ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।


  • রোজা পালনের জন্য প্রয়োজন :

সঠিক ডায়েট নির্বাচন, শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শক্তি, অদম্য ইচ্ছা ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্য।


শেষ কথা

আশা করি উপরিউক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনি জানতে পেরেছেন রমজান মাসে শরীর সুস্থ রাখার উপায়গুলো সম্পর্কে। তবে মানুষের রোগ-ব্যাধির কারনে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দিতেই পারে। আর এজন্য স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে ভুলবেন না। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং নিয়মিত রোজা করুন। 

ধন্যবাদ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অনার্স প্রথম বর্ষ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর ২০১৮ | Hon's 1st year previous year question with answer 2018

অনার্স প্রথম বর্ষ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর ২০১৯ | Hon's 1st year previous year question with answer 2019

অনার্স প্রথম বর্ষ স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বোর্ড প্রশ্ন ও উত্তর ২০২০ | Hon's 1st year previous year question with answer 2020