মিশ্র অর্থনীতির মূল বৈশিষ্ট্য সমূহ আলোচনা কর

মিশ্র অর্থনীতির মূল বৈশিষ্ট্য সমূহ আলোচনা কর।
অথবা মিশ্র অর্থনীতির গুণসমূহ আলোচনা কর।


ভূমিকা: মিশ্র অর্থব্যবস্থায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত স্বাধীনতাও নেই আবার সম্পূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণও নেই। 


মিশ্র অর্থনীতির মূল বৈশিষ্ট্য নিম্নে আলোচনা করা হলো:

১. সরকারি বিনিয়োগঃ জনগুরুপূর্ণ খাতসহ রাষ্টীয় নিরাপত্তা খাতগুলোতে সরকারি উদ্যোগে বিনিয়োগ পরিচালিত হয়। 


২. বেসরকারি বিনিযোগঃ ববসাস বাণিজ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পস্থাপনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিনিয়োগ পরিচালিত হয়। তবে সরকারি পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে যাতে একচেটিয়া কারবার নিয়ন্ত্রণে থাকে।


৩. ব্যক্তিগত মালিকানাঃ মিশ্র অর্থব্যবস্থায় সম্পদের ব্যক্তিগত মালিকানার সুযোগ থকলেও কিছু কিছু সম্পদের মালিকানা ব্যক্তির হাতে দেওয়া হয় না।


৪. সরকারি মালিকানাঃ মিশ্র অর্থনীতিতে ব্যক্তিগত মালিকানার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে সরকারি মালিকানা বজায় থাকে।


৫. ভোক্তার স্বাধীনতা: মিশ্র অর্থব্যবস্থায় ভোক্তার পছন্দ অনুযায়ী দ্রব্যসামগ্রিক উৎপাদন করা হয় এবং ক্রেতা তার পছন্দ অনুযায়ী দ্রব্য ক্রয় ও ভোগ করতে পারে।


৬. দাম ব্যবস্থা: পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ন্যায় মিশ্র অর্থনীতিতেও চাহিদা ও যোগানের ঘাত-প্রতিঘাতে দ্রব্যমূল্য নির্ধারিত হয়।


৭. বন্টন ব্যবস্থা: মিশ্র অর্থব্যবস্থায় সম্পদের ব্যক্তিগত মালিকানা স্বীকার করা হয় বলে জাতীয় আয়ের সুষম বন্টন সম্ভব হয় না।


৮. মুনাফার উপস্থিতি: ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার ন্যায় মিশ্র অর্থব্যবস্থায়ও মুনাফার অস্তিত্ব স্বীকার করা হয়। তবে শুধুমাত্র বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ মুনাফা অধিক প্রযোজ্য।


৯. শ্রমিকদের স্বার্থসংরক্ষণ: মিশ্র অর্থব্যবস্থায় শ্রমিকদের স্বার্থসংরক্ষণের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে।


১০. মুদ্রাস্ফতির উপস্থিতি: মিশ্র অর্থনীতিতে যেহেতু ব্যক্তির উদ্যোগ স্বীকৃত এবং মুনাফার পরিমাণ বৃদ্ধিতে সরকারে বাধা নেই, তাই অনেক সময় অতি উৎপাদন এবং অনেক সময় কম উৎপাদন সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই মুদ্রাস্ফতি ও মিশ্র অর্থনীতিতে বিদ্যমান থাকে।


১১. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: মিশ্র অর্থনীতিতে জাতীয় অর্থনৈতিক লক্ষ্যসমূহ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হয় এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত হয়।


১২. সামাজিক নিয়ন্ত্রণ: সমাজে সার্বিককল্যাণের দিকে লক্ষ্য রেখে সরকার অনেক সময় মিশ্র অর্থনীতিতে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে রাষ্ট্রীয়ত্ব করে।


উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো মিশ্র অর্থব্যবস্থায় পরিলক্ষিত হয়।


  • আরও পড়ুন:
  1. ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনীতির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর।
  2. ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বা পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য সমূহ আলোচনা কর।
  3. সংখ্যাগত উপযোগ ও পর্যায়গত উপযোগের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর।
  4. একটি কাল্পনিক চাহিদাসূচী থেকে চাহিদারেখা অঙ্কন কর।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ